মার্কেটিং করার কৌশল

৬ টি ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সমূহ (বিস্তারিত দেখুন)

আজকে আমি আপনাদের কিছু মার্কেটিং করার কৌশল আলোচনা করব। এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে কিভাবে আপনাদের ব্যবসার উন্নতি করতে পারেন, ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ছোট ব্যবসা কে খুব দ্রুত বড় করার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোন বিকল্প নেই। এই প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়িক যুগে মার্কেটিং ছাড়া কোন ব্যবসা টিকে থাকতে পারবে না। ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল এ  যে যত বেশি এগিয়ে সে ততো বেশি ব্যবসায় সফল।

আমি websoriful এবং আমি আমার তিন বছরের ফ্রিল্যান্সিং অভিজ্ঞতার আলোকে ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

মার্কেটিং করার কৌশল

ডিজিটাল মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং করে হাজার হাজার ডলার ইনকাম

আদিম যুগের সেই বিজ্ঞাপন এর সাহায্যে বর্তমান বিজ্ঞাপন দেওয়া এবং প্রডাক্ট বিক্রি করা সম্ভব নয়।  যতই ডিজিটাল দুনিয়া প্রসার ঘটছে, ততই আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারযোগ্য পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে মানুষ সচেতন হচ্ছে।

বর্তমানে কাস্টমাররা কোন পণ্য ক্রয় করার আগে পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে পণ্য ব্যবহার করে থাকে। সুতরাং আপনার প্রোডাক্টের গুণগত মান সম্পর্কে ডিজিটাল ভাবে উপস্থাপন করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সুতরাং বর্ধমান ডিজিটাল যুগের কথা বিবেচনা করে মার্কেটিং করার কৌশল আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে এবং আপনাকে ডিজিটাল ভাবে আপনার পণ্যের মার্কেটিং করার কৌশল অবলম্বন করতে হবে।  সুতরাং আজকে ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

মার্কেটিং কি ?

মার্কেটিং করার কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে জানতে হবে মার্কেটিং কি ! মোটকথা ডিজিটাল মাধ্যমে এবং ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে  যে মার্কেটিং করা হয়, তাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়।

কাস্টমার টার্গেট

ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার আগে আপনার টার্গেট কাস্টমারকে খুঁজে বের করা হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সমূহের মধ্যে একটি। অর্থাৎ আপনার প্রোডাক্ট কোন শ্রেণীর কাস্টমার ক্রয় করবে, তাদেরকে টার্গেট করা।

যেহেতু আপনার পণ্য বা সার্ভিস এর সম্ভাব্য ক্রেতা রয়েছে। সুতরাং আপনার পরিকল্পনা হওয়া উচিত আপনার সম্ভাব্য ক্রেতারা কোন বয়সের হবে এবং কোন লিঙ্গের হবে ইত্যাদি খুঁজে বের করা।  যদি আপনি আপনার সম্ভাব্য ক্রেতাদের তালিকা তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনি মার্কেটিং করার জন্য প্রস্তুত।

ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন

আপনার টার্গেট করে তাদের খুঁজে বের করে এখন আপনার কাজ হবে ডিজিটাল মাধ্যমে আপনার পণ্যের বিজ্ঞাপন দেওয়া।  অবশ্যই এই বিজ্ঞাপন গুলো জনসাধারণের জন্য নয়। এটা শুধু আপনার টার্গেট মানুষের জন্য। 

অর্থাৎ আপনার টার্গেট কাস্টমার যদি ছেলে হয়, তাহলে আপনি ছেলেদের টার্গেট করে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিবেন। আর আপনার ব্যবসা যদি একটি নির্দিষ্ট কোন এলাকা ভিত্তিক হয়, তাহলে আপনি ওই এলাকায় আপনার প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দিবেন। 

সংশোধনের জন্য বিজ্ঞাপন দিয়ে আপনার বিজ্ঞাপনের খরচ বৃদ্ধি করবেন না। এতে আপনার অনেক বেশি মার্কেটিং খরচ হবে এবং আপনার কাঙ্ক্ষিত বিক্রয় বাসেল পাবেন না। সুতরাং আপনার টার্গেট কাস্টমারের কাছে ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেন। 

ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য অনেকগুলো বিজ্ঞাপন মাধ্যম রয়েছে।  অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেয়া সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক এবং গুগোল ads.  অর্থাৎ আপনি আপনার ব্যবসা ফেসবুকের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রসার করাতে পারেন। 

কিন্তু বর্তমানে টিকটকের এডভান্সের সিস্টেমটি এখন জনপ্রিয় হচ্ছে। আপনার ব্যবসা যদি কোন ডিজিটাল ডিভাইস বা কোন সফটওয়্যার হয়ে থাকে, তাহলে আপনি টিকটকে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন।  কারণ বর্তমানে টিকটক খবর জনপ্রিয় এবং এখানে ইয়ং জেনারেশন এর সংখ্যা বেশি। 

আর আপনার ব্যাবসা যদি জনসাধারণের জন্য হয়ে থাকে, তাহলে আপনি গুগোল ads এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। কারণ গুগোল আপনার বিজ্ঞাপন বিভিন্ন অ্যাপস সফটওয়্যার এবং ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে প্রচার করবে।

কাস্টমারকে ব্র্যান্ডের গল্প জানানো

যেহেতু আপনি ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে চাচ্ছেন, তাহলে অবশ্যই আপনার কোম্পানির ডিজিটাল প্রোফাইল থাকা প্রয়োজন। যেমন: ফেসবুক প্রোফাইল, ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল, এবং ব্লগ ইত্যাদি।

এছাড়া অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট থাকা প্রয়োজন। এবং সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার কোম্পানির কোন প্রোগ্রামের ডিটেলস পোস্ট,  এবং প্রতিনিয়ত পোস্ট করা উচিত। অর্থাৎ আপনার সবগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ থাকা উচিত।

এবং অবশ্যই আপনার কাস্টমারদের প্রতিদিন আপনার ব্র্যান্ডের গল্প শোনানো উচিত।  এগুলো হতে পারে আপনার কোম্পানির বিভিন্ন তথ্যের পোস্ট অথবা ভিডিও অথবা কোন প্রোডাক্ট এর ডিটেলস সহ ভিডিও ইত্যাদি।

আপনার টার্গেট কাস্টমারদের আপনার ব্র্যান্ডের গল্প শোনান ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল  সমূহের মধ্যে একটি। এর মাধ্যমে আপনার ব্যবসার একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে  এবং আপনি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি বিক্রি করতে পারবেন।

বিভিন্ন কুপন অফার

আপনার ব্যবসাকে অনেক বেশি বৃদ্ধি এবং অনেক বেশি বিক্রি করার জন্য অবশ্যই আপনার সব সময় বিভিন্ন প্রকার কুপন অফার করা উচিত। এবং বিভিন্ন অফার চালু করবেন।  এতে আপনার কোম্পানির প্রোডাক্ট গুলো অনেক বেশি পরিচিত হবে এবং অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌছাবে। 

বিভিন্ন লটারি অথবা কুপন চালু করে আপনি হয়তো 12 জনকে ফ্রিতে একটি সার্ভিস বা একটি পণ্য অফার করতে পারেন। আপনি কোন একটি প্রোগ্রাম চালু করলেন এবং সেই প্রগ্রামে বললেন আপনার বন্ধুদেরকে ইনভাইট করলে আপনিও লটারি তে জিতে নিতে পারেন ফ্রিতে এই সার্ভিস বা এই প্রোডাক্টটি। 

এতে করে আপনার টার্গেট কাস্টমাররা আপনাদের কোম্পানির অনেক বেশি প্রচার করবে। কথায় আছে প্রচারেই প্রসার। অর্থাৎ আপনি যত বেশি প্রচার করবেন, আপনার ব্যবসা  তত বেশি প্রসার ঘটবে।  সুতরাং প্রতিমাসেই আপনি বিভিন্ন কুপন অফার করতে পারেন।

পণ্য সঠিক বিবরণ এবং দাম

 বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার প্রোডাক্টের সঠিক বিবরণ এবং দাম সম্বলিত পোস্ট অথবা ভিডিও প্রতিনিয়ত প্রকাশ করতে পারেন।  আপনার প্রোডাক্ট  কেন ক্রয় করা উচিত এটা আপনি বিভিন্ন উপায়ে উপস্থাপন করবেন।

এবং আপনার পণ্যের সঠিক বিবরণ সহ উপস্থাপন করা উচিত। এবং প্রোডাক্টটি কিভাবে ব্যবহার করবে এই সম্বলিত পোস্টও করতে পারেন। আপনার  ক্রেতারা যাতে বুঝতে পারে, এটা কিনার পরে কিভাবে ব্যবহার করা উচিত বা কিভাবে প্রয়োগ করা উচিত। 

ডিজিটাল মাধ্যমে ফ্রিতে প্রচার

আপনার পণ্যের ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার করা উচিত। আমি ইতিমধ্যে বলে দিয়েছি আপনার প্রোডাক্টের কিভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিবেন। এখন আপনার টার্গেট থাকবে আপনার পণ্যটির কিভাবে ডিজিটাল  মাধ্যমে ফ্রিতে প্রচার করা উচিত।

ফ্রিতে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার করার জন্য কয়েকটি মাধ্যম রয়েছে। নিচে পাঁচটি মাধ্যম ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

  1.  সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার
  2.  এফিলিয়েট প্রোগ্রাম
  3.  কনটেন্ট মার্কেটিং
  4.  সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
  5.  কুপন প্রোগ্রাম

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার:

আপনি আপনার প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার পণ্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সমূহ পোস্ট প্রতিনিয়ত প্রকাশ করতে পারেন। এতে আপনার সোশ্যাল মিডিয়াতে ফলোয়ার তৈরি হবে এবং আপনি অনেক বেশি টার্গেট কাস্টমার খুঁজে পাবেন।

এফিলিয়েট প্রোগ্রাম:

আপনার পণ্যের জন্য আপনি এফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু করতে পারেন।  এফিলিয়েটেড কমিশনের জন্য অনেক ইউজার দেখবেন আপনার পণ্যটি বিক্রির জন্য বিভিন্ন মানুষজনকে রিকমেন্ডেশন পাঠাচ্ছি। এফিলিয়েট প্রোগ্রাম ফ্রিতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। 

কনটেন্ট মার্কেটিং:

কন্টেন্ট রাইটিং
কন্টেন্ট রাইটিং

আপনার পণ্যের গুণাগুণ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে কন্টাক্ট আকারে প্রকাশ করতে পারেন।  এতে সেইসকল ফোরাম বা ব্লগ সাইট থেকে আপনি আপনার টার্গেট ক্রেতাদের খুঁজে পাবেন।   কনটেন্ট মার্কেটিং করার জন্য আপনি আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রচার করতে পারেন।

কন্টেন্ট রাইটিং-এ এসইওর (SEO) গুরুত্ব

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং:

 কন্টাক্ট মার্কেটিং করার জন্য আপনি আপনার কোম্পানীর জন্য একটি ব্লগ সাইট তৈরি করতে পারেন সেই ব্লগ সাইটে আপনার প্রোডাক্টের বিবরণ সহ বিভিন্ন পোস্ট প্রতিনিয়ত করতে পারেন।

এসইওর মাধ্যমে যদি আপনি আপনার ব্লগ সাইটে পোস্টগুলো গুগোল রেংকিং করাতে পারেন তাহলে আপনি গুগল থেকে অনেক অনেক বেশি টার্গেট কাস্টমার খুঁজে পাবেন এবং সম্পূর্ন ফ্রীতে খুঁজে পাবেন।

কুপন প্রোগ্রাম:

আপনি আপনার প্রোডাক্টের বিভিন্ন কুপন অফার করতে পারেন  এবং এই  কুপন ব্যবহার করে আপনার বিক্রি বৃদ্ধি করতে পারেন। যেমন: আপনি একটি কুপন অফার করলেন যে এই প্রোডাক্টটি 30 জনের কাছে রেফারেল করলে আপনি লটারি টিকিট পেয়ে যাবেন এবং এই লটারি থেকে 10 জনকে ফ্রিতে এই পণ্যটি দেওয়া হবে। 

দেখবেন একজন ব্যক্তির জনকে রেফার করেছি এবং সেই ব্যক্তি আরো 400 জনকে রেফার করেছে।  এভাবে আপনার পণ্য বা প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপন অনেক জনের কাছে চলে যাবে। এভাবে অনেক অনেক বেশি প্রচার করতে পারবেন। 

আপনি হয়তো সেই পণ্যটি দশজনকে ফ্রিতে দিচ্ছেন। এবং একসময় দেখবেন এই পণ্যের অনেক অনেক বেশি প্রচার হয়েছে। এবং এখান থেকে আপনি অনেক বেশি বিক্রি হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন গোপন প্রোগ্রাম কতটা প্রফিটেবল একটি বিজ্ঞাপন সিস্টেম। 

শেষ কথা

আমি আমার ফ্রিল্যান্সিং অভিজ্ঞতার আলোকে ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সমূহ  নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশাকরি আপনি আমার ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। 

আপনি আমার ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সমূহ আপনার ব্যবসায় প্রয়োগ করে আপনার ব্যবসার প্রচার এবং প্রসার করতে পারেন।  আপনার ব্যবসার জন্য শুভকামনা। 

আপনার যদি কোন প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে, তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন।  আমি সমস্ত  কমেন্টের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।  আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

2 thoughts on “৬ টি ডিজিটাল মার্কেটিং করার কৌশল সমূহ (বিস্তারিত দেখুন)”

  1. আজ অর্থ উপার্জন শুরু করার জন্য সেরা বিনিয়োগ যন্ত্র চালু করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *